কাফ্ফারার
নিয়ম
কাফ্ফারা
দেয়ার নিয়ম হল একটি রোজার কাফ্ফারা হিসেবে লাগাতার ৬০ দিন রোজা রাখতে হবে। এরপর
আর একটি রোজা রাথতে হবে। সর্বমোট ৬১ টি রোজা রাখতে হবে। কাফ্ফারার মধ্যে একাধারে
না করলে কাফ্ফারা আদায় হবে না। একাধারে ৬০ টির মাঝে যদি একটি রোজাও ভঙ্গ করে তবে
পুনরায় ৬০ টি রোজা রাখতে হবে।
যদি কেউ
অসুস্থতার কারণে ৬০ টি রোজা রাখতে অক্ষম হয় তবে সে একজন মিসকিনকে একটানা ৬০ দিন
দুই বেলা পেট পুরে আহার করাবে। কিংবা সেই পরিমাণ খাবার বা খাবারের মূল্য তাদেরকে
দিয়ে দিবে। উল্লেখ্য যে, একই রমজানের একাধিক কাজার জন্য কাফ্ফারা একবারই ওয়াজিব
হয়ে থাকে এবং রমজানের রোজা ব্যতীত অন্য কোন রোজার কাফ্ফারা নেই।
যে সব কাজ
করলে রোজা ভাঙ্গে না
০১. ভুলক্রমে
কোন কিছু পানাহার করা, অবশ্য মনে হওয়ার সাথে সাথে তা মুখ থেকে ফেলে দিতে হবে।
০২. ভুলে
সহবাস আরম্ভ করা, তবে রোজার কথা মনে হওয়ার সাথে সাথেই তা হতে বিরত থাকতে হবে।
০৩. দিনের
বেলায় স্বপ্নদোষ হলে।
০৪. কোন কারণ
বশতঃ কামভাব ছাড়া অনিচ্ছায় বীর্য স্থলন হলে।
০৫. থুথু গিলে
ফেললে।
০৬. নাকে বা
কানে পানি প্রবেল করলে।
০৭. গরম ভাত
বা তরকারীর ধোয়া পেটে প্রবেশ করলে।
০৮. সুগন্ধি
ব্যবহার করলে বা ফুলের ঘ্রান নিলে।
০৯. অন্যের
গীবত-কুৎসা রটালে তবে
খুবই খারাপ।
১০. মিথ্যা
বললে। উলঙ্গ হলে। অল্প বমি হলে।
১১. হঠাৎ মশা-মাছি, ধুলা-বালি ইত্যাদি পেটে
প্রবেশ করলে।
১২. চোখে
সুরমা ব্যবহার করলে।
১৩. মিসওয়াক
করলে-যদি দাঁত হতে রক্ত বের হয়।
১৪.
অনিচ্ছাকৃত বমি হলে।
১৫. ঠাণ্ডার
জন্য গোসল করলে।
১৬. চোখে ঔষধ
ব্যবহার করলে।
১৭. শরীরে যে
কোন ধরনের ইনজেকশন নিলে।
যে কারণে রোজা
ভাঙ্গা বৈধ
১. রোগীর রোগ
বৃদ্ধির আশংকা হলে তবে এক্ষেত্রে অভিজ্ঞ মুসলিম ডাক্তারের পরামর্শক্রমে রোজা
ভাঙ্গা যেতে পারে।
২. সাপে কামড়
দিলে।
৩. দুগ্ধপোষ্য
শিশুর মায়ের বুকের দুধ রোজার কারণে কমে গেলে সে মা রোজা ভাঙতে পারবে।
৪. মুসাফির
ব্যক্তি সফর শুরু করার পর বা প্রবাসে বেশী কষ্টের আশংকা থাকলে।
৫. নারীদের
হায়েজ নিফাস হলে রোজা রাখা নিষেধ।
৬. পিপাসায় বা
ক্ষুধায় প্রাণ নাশের আশংকা দেখা দিলে।
৭. বার্ধক্যের
কারণে রোজা রাখতে অসমর্থ হলে।
এসকল কারণে
রোজা না রাখলে পরবর্তীতে কাজা করা জরুরী
কতিপর জরুরী
জ্ঞাতব্য
০১. নিয়ত
ব্যতীত রোজা বিশুদ্ধ হবে না, তবে নিয়ত মনে মনে করলেই হয়ে যাবে। যেমন রোজা রাখার
নিয়তে সেহরী খেলে কিংবা রাতে ঘুমানোর সময় এই নিয়ত করলে যে, কাল সে রোজা রাখবে। যদি
কেই রোজার নিয়ত করতে ভুলে যায় তবে দ্বিপ্রহরের পূর্ব পর্যন্ত রমজানের রোজার নিয়ত
করতে পারবে। আর নফল রোজার নিয়ত সুব্হে সাদিকের পূর্বেই করতে হবে। অন্যথায় রোজা
হবে না।
০২. কোন সুস্থ
মুকীম ব্যক্তি যদি রমজানের দিনে কাজা বা কাফ্ফারা বা নফল রোজার নিয়ত করে তবে, তার
রমজানের রোজাই আদায় হয়ে যাবে।
০৩. ফরজ রোজার
কাজা লাগাতার বা একদিন রেখে একদিন বাদ দিয়ে ইত্যাদি পন্থায় রাখতে পারবে।
০৪. যদি ফরজ কোন
রোজার মান্নত করে তবে তার উপর ঐ রোজা রাখা ওয়াজিব হয়ে যায়। যদি তা না রাখে তবে
ওয়াজিব তরক করার গোনাহ্ হবে।
০৫. যদি কোন
নির্দিষ্ট তারিখের মান্নত করে তবে তাকে ঐ দিনই রোজা রাখতে হবে। আর অনির্দিষ্ট
মান্নত করলে যে কোন দিন রোজা রাখলেই তা আদায় হয়ে যাবে।
০৬. যদি কেউ
নিষিদ্ধ দিবস গুলোতে রোজা রাখার মান্নত করে তবে তাকে ঐ দিবস গুলোতে রোজা রাখতে হবে
না, বরং পরবর্তীতে কাজা করতে হবে। নিষিদ্ধ দিনে রোজার মান্নত করার কারণে তাকে
গোনাহ্গার হতে হবে।
০৭. নফল রোজা
ভেঙ্গে ফেললে তার কাজা আদায় করা জরুরী হয়। অপ্রাপ্ত বয়স্ক বালক-বালিকাদের রমজানের
রোজা নফল হবে। তবে তারা তা ভেঙ্গে ফেললে তার কাজা আদায় করতে হবে না।
০৮. সাওয়াল
চাঁদের ছয় রোজা একসাথেও রাখা যায়। ইচ্ছা করলে পৃথক পৃথকও রাখা যায়, ঈদের পরের দিন
থেকেও তা আরম্ভ করা যায়, তবে একদিন বাদ দিয়ে এক দিন রোজা রাখলে ছওয়াব বেশী হয়।
০৯. সেহরী
হওয়া সুন্নত যদিও সেহরী খাওয়ার নিয়তে একগ্লাস পানি পান করে নেয় তবুও সেহ্রীর
সুন্নত আদায় হয়ে যাবে।
১০. সূর্যাস্ত
যাওয়া মাত্র ইফতার করা সুন্নত। অহেতুক বিলম্ব করা মাকরূহ; তবে আকাশ মেঘলা থাকলে
দেরী করে ইফতার করাই উত্তম।
No comments:
Post a Comment