Thursday, April 9, 2015

রোজা ও ইফতারের নিয়ত এবং রোজার ফরজ ও সুন্নাত সমূহ

রোজার নিয়ত
نويت ان اصوم غدا من شهر رمضان المبارك فرضالك يا الله فتقبل منى انك انت السميع العليم

উচ্চারণঃ-
নাওয়াইতু আন আছুমা গাদাম্‌ মিন্‌ শাহ্‌রি রামাদানাল মুবারারিক ফার্‌দাল্লাকা ইয়া আল্লাহু ফাতাক্বাব্বাল মিন্নী ইন্নাকা আন্তাস্‌ সামিউল আলীম।
অর্থঃ-
হে প্রভূ! আমি আগামীকাল পবিত্র রমজান মাসের ফরজ রোজা রাখার নিয়ত করলাম। সুতরাং তুমি আমার পক্ষ হতে তা কবুল কর। নিশ্চয় তুমি সর্বশ্রেষ্ঠ শ্রোতা এবং সর্বজ্ঞ।

ইফতারের নিয়ত
اللهم لك صمت وعلى رزقك افطرت
উচ্চারণঃ-
আল্লাহুম্মা লাকা ছুমতু ওয়া আলা রিজক্বিকা আফ্‌তারতু।
অর্থঃ-
হে আল্লাহ্‌! তোমার জন্যই আমি রোজা রেখেছি এবং তোমার প্রদত্ত জীবিকা দ্বারাই রোজা ভঙ্গ করছি।
ইফতার করানোর ফযীলত
রোজা রাখা যেমন ছওয়াবের কাজ তদ্রুপ, রোজা খোলা বা ইফতার করাও অত্যন্ত পূণ্যের কাজ এবং অপরকে ইফতার করানও বহু ছওয়াবের কাজ। বর্ণিত আছে যদি কোন ব্যক্তি রোজাদারকে ইফতার করায় তবে সে রোজাদারের সমান পরিমাণ ছওয়াব পাবে এবং এতে রোজাদারের ছওয়াব হতে সামান্য কিছুও কম করা হবে না। অপর এক হাদীছে বর্ণিত আছে-
من فطر صائما على تمرة او شربة من ماء او مزقة لبن كان له مغفرة وهو شهر اوله رحمة واوسطه مغفرة و اخره عتق من النار
উচ্চারণঃ-
মান ফাত্‌তারা ফিহি ছা-য়িমান আলা তামারাতিন আও শারবাতিম্‌ মিম্‌ মা-ইন আও মাযক্বাতি লাবানিন কানা লাহু মাগফিরাতান ওয়াহুয়া শাহ্‌রুআওয়ালুহু    রাহ্‌মাতুন ওয়া আওছাতুহু মাগফিরাতুন ওয়া আখিরুহু ইত্ব্‌কুম্‌ মিনান্নার
অর্থঃ-
যে ব্যক্তি কোন রোজাদারকে একটি খেজুর কিংবা এক গ্লাস পানি, কিংবা কিছু শরবত দ্বারা ইফতার করায় তবে এ ইফতার তার পাপ মোচনের কারণ হবে। এটা তো এমন একটি মাস যার প্রথমাংশ হল রহমতের, দ্বিতীয়াংশ বা মধ্যমাংশ হল ক্ষমা বা পাপ মোচনের এবং শেষাংশ হল জাহান্নাম হতে মুক্তির।
من فطر فيه صائما كان مغفرة لذنبه وعتق رقبته من النار-
উচ্চারণঃ-
মান ফাত্‌তারা ফিহি ছা-য়িমান কানা মাগফিরাতান লিজুনুবিহি ওয়া ইত্‌ক্বি রাক্বাবাতিহি মিনান্নার।
অর্থঃ-
যে ব্যক্তি রমজান মাসে কোন রোজাদার ব্যক্তিকে ইফতার করায় তবে সে ইফতার করান তার গোনাহ্‌ মোচন ও জাহান্নাম হতে মুক্তির কারণ হবে

রোজার ফরজ দু'টি
১. নিয়ত করা ২. সুব্‌হে সাদিক হতে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পানাহার ও স্ত্রী সম্ভোগ হতে বিরত থাকা।

রোজার সুন্নত সমূহ
রোজার মধ্যে কয়েকটি বিষয় সুন্নত-
১. হাত, পা, কর্ণ, নাসিকা, জিহ্বা ও অন্তঃকরণ দ্বারা সিয়াম বা রোজা পালন করা।
২. সর্বদা নেক কাজ করা।
৩. রোজা অবস্থায় দোয়া, দরুদ, তাসবীহ্‌-তাহলীল ও কোরআন তিলাওয়াতে লিপ্ত থাকা।
৪. বেশী বেশী দান খয়রাত করা।
৫. সময় হওয়ার সাথে সাথে কাল বিলম্ব না করে ইফাতার করা।
৬. রমজানের রাত সমূহ তারাবীহের নামায আদায় করা।
৭. সমগ্র রমজানে তারাবীহের নামাযে সমস্ত কুরআন শরীফ তিলাওয়াত করা বা শ্রবণ করা।

৮. রমজান মাসে শেষ দশকে ই'তিকাফ করা।

রোজার মাকরূহ সমূহ
০১. বিনা প্রয়োজনে কোন কিছুর স্বাদ নেওয়া।
০২. বিনা প্রয়োজনে কোন কিছু চর্বণ করা বা চাবান।
০৩. মিথ্যা কথা বলা।
০৪. গীবত করা।
০৫. অশ্লীল কথাবার্তা বলা বা গালিগালাজ করা।
০৬. ইচ্ছাকৃতভাবে সামান্য বমি করা।
০৭. অহেতুক ইফতারে বিলম্ব করা।
০৮. কর্ণ কূহরে পানি প্রবেশ করান।
০৯. পুরষ লিঙ্গের ভিতরে পানি প্রবেশ করানো।
১০. মুখে তেল রাখা।
১১.বার বার কুলি করা বা গোসল করা।
১২. গোসলে অধিক পানি খরচ করা।
১৩. ভেজা কাপড় গায়ে জড়িয়ে রাখা।
১৪. মুখে বুটের চেয়ে ছোট কোন বস্তু চাবিয়ে গিলে ফেলা।
১৫. অনিচ্ছাকৃতভাবে মুখি বমি এসে আবার উদরে চলে যাওয়া।
১৬. রোজা রেখে একেবারেই চুপ থাকা।
১৭. প্রেমাসক্ত হয়ে স্বীয় স্ত্রীকে বা অন্য কাউকে একাধিকবার চুম্বন করা বা কোলে তুলে নেয়া।
১৮. কু-বাসনায় কোন মেয়ের দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করা। সমস্ত দিন নাপাক অবস্থায় থাকা।
১৯. অস্থিরতা ও কাতরতা প্রকাশ করা।
২০. কয়লা চিবিয়ে বা পাউডার, গুল, পেষ্ট বা অন্য কোন মাজন দ্বারা দাঁতন করা।
২১. কোন জিনিষ মুখে দিয়ে রাখা।
২২. গড়গড়া করা।
২৩. নাকের ভিতর পানি টেনে নেয়া।
২৪. ইচ্ছাকৃতভাবে মুখ থুথু জমা করে গিলে ফেলা।


যে কারণে রোজা ভঙ্গ হয়, কাযা করতে হয়
কিন্তু কাফ্‌ফারা দিতে হয়না
০১. কোন ব্যক্তি কাঠ, পাথর, মাটি ইত্যাদি ভক্ষণ করলে।
০২. অনিচ্ছাকৃত গলার ভিতর পানি ঢুকে গেলে।
০৩. কেউ জোর পূর্বক কিছু খাইয়ে দিলে।
০৪. নিরূপায় হয়ে অন্যের দ্বারা সঙ্গমে লিপ্ত হলে।
০৫. পায়খানা পেশাবের রাস্তায় পিচকারী দিলে।
০৬. ঘুমের মধ্যে কোন জিনিষ খাইয়ে দিলে।
০৭. কানের ভিতর ঔষধ প্রবেশ করালে।
০৮. নাকের ভিতর দিয়ে মস্তকে পানি প্রবেশ করলে।
০৯. অনিচ্ছায় মুখ ভরে বমি করলে।
১০. ঔষধ পেটে বা মাথায় ঢুকে গেলে।
১১. সুব্‌হে সাদিক হয়নি মনে করে সুব্‌হে সাদিকের পর ছেহ্‌রী খেলে।
১২. সূর্যাস্ত হয়ে গেছে মনে করে সূর্যাস্তের পূর্বে ইফতার করলে।
১৩. ভুলে পানাহার করার পর রোজা ভেঙ্গে গেছে মেন করে পানাহার করলে।
১৪. ঘুমের মধ্যে সঙ্গম করলে।
১৫. অবচেতন অবস্থায় সহবাস করলে।
১৬. দাঁত হতে চানা বুট পরিমাণ কোন কিছু বের করে গিলে ফেললে।
১৭. সামান্য পরিমাণ বমি গিলে ফেললে।
১৮. কুলি করার সময় গলায় পানি ঢুকে গেলে।
১৯. মুখে পান রেখে ঘুমিয়ে সুব্‌হে সাদিকের পর জাগ্রত হলে।
২০. ধুমপান করলে।
২১. ইচ্ছাকৃতভাবে কোন সুগন্ধির ধোঁয়া নাকের ভিতর টেনে নিলে।

যে সকল কারণে কাযা ও কাফ্‌ফারা উভয় ওয়াজিব
১. ইচ্ছাপূর্বক বিনা ওজরে রোজা না রাখলে।
২. রোজা রেখে ইচ্ছা পূর্বক পানাহার করলে।
৩. রোজা রেখে ইচ্ছা পূর্বক সঙ্গম করলে।
৪. ইচ্ছাপূর্বক মনি নির্গত করলে।

৫. ইচ্ছাপূর্বক ঔষধ সেবন করলে।

No comments:

Post a Comment